অনলাইন লার্নিং কেন এবং কিভাবে ক্লাসরুম লার্নিং এর চেয়ে ফলপ্রসূ?
অনলাইন লার্নিং কেন এবং কিভাবে ক্লাসরুম লার্নিং এর চেয়ে ফলপ্রসূ?
অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে ই-লার্নিং এখন বৈশ্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য। অন্তত ৭২% কম্পানী এটা বিশ্বাস করে যে অনলাইন লার্নিং তাদেরকে একটি প্রতিযোগিতামূলক চূড়ায় নিয়ে গেছে। IBM এর তথ্যমতে গতানুগতিক কোর্সের তুলনায় ই-লার্নিং কোর্সে অংশগ্রহণকারীরা প্রায় ৫ গুন বেশি শিখতে পারে। বিশেষ করে কোভিড-১৯ এর যে প্রভাব টা গত ৬ মাসে আমরা দেখেছি, তাতে এটা প্রমাণিত অনলাইন বহুমুখী শিক্ষণ এর ক্ষেত্রে দারুন, সাধারণ ধারার শিখন পদ্ধতি থেকে তো বটে ই।
শিক্ষার্থীরা কোভিড-১৯ এর কারনে সম্পুর্ন নতুনধর্মী শিক্ষাব্যবস্থার অভিজ্ঞতা পেতে যাচ্ছে। বেশ কিছু গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীরা যদি ৮-১০% মনোযোগ ধরে রাখতে পারে, তবে অনলাইনে পারে ২৫-৬০%। এটা এই কারনে যে অনলাইনে তারা দ্রুত আয়ত্ত করতে পারে। আমাদের চিরাচরিত ক্লাসরুম গুলোর যে সেটিং সেই তুলনায় ই-লার্নিং জগতে শেখার ক্ষেত্রে ৪০-৬০% সময় কম লাগে।এর পেছনে কারন গুলো হলো শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ গতিতে পড়তে পারছে, যখন ই প্রয়োজন হচ্ছে পুরনো পড়া পড়তে পারছে, মাথা খাটানোর জন্য বা বুঝে নেয়ার জন্য যথেষ্ট সময় নিতে পারছে, বোধশক্তি বিকাশে বিষদভাবে ধারণা লাভ করতে পারছে।
ডেভিড মিশিগান, সিইও, মিশিগান একাডেমি।
চিরাচরিত শিক্ষা এবং অনলাইন শিক্ষা দুটোর ই কিন্তু মূল উদ্দেশ্য এক। দুটো প্লাটফর্ম ই চায় তাদের শিক্ষার্থীদের জন্য সেরা পরিবেশ টা দিতে। যাই হোক, প্রশ্নটা হলো ই-লার্নিং এর উপকারিতা শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারে এগিয়ে যাচ্ছে কি না। তো এক নজরে দেখে আসা যাক যে কেন সরাসরি শিক্ষনের চেয়ে অনলাইন অধিক কার্যকরী:
স্থান ও সময়
Brandon Hall Group 2017 এর মতে ই-লার্নিং কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের হার ৪০-৬০% পর্যন্ত কমিয়ে আনতে পারে। ই-লার্নিং এর মাধ্যমে যে কোন সময় যে কোন স্থান থেকে শিক্ষার্থীরা শিখতে পারে। মান্ধাতার আমলের শিক্ষা ব্যবস্থার তুলনায় এটা একটা দারুন সুবিধা।
চাহিদা
২০২৫ সাল নাগাদ অনলাইন শিক্ষন ৩২৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এখনকার কোম্পানি গুলো নিজ নিজ চাহিদা অনুযায়ী সম্পুর্ন কাস্টমাইজড ডিজিটাল কন্টেন্ট চেয়ে থাকে।
সাশ্রয়ী
শিক্ষার্থী এবং কর্মী উভয়ের জন্য ই অনলাইন লার্নিং অপেক্ষাকৃত সাশ্রয়ী। ট্রেনিং এর সময় এবং ঘুরাঘুরি তো কমেছে ই, সাথে কোর্স মেটারিয়ালস এবং উপযোজন খরচ ও কমেছে বেশ।কর্মপরিধি:নতুন কোন সুচনা,পলিসি ও ট্রেনিং পরিচালনার ক্ষেত্রে ই-লার্নিং হলো সেরা সমাধান। নিয়মনিষ্ঠ শিক্ষাদান বা চিত্তবিনোদন যে কোন উদ্দেশ্যে আপনি এই প্লাটফর্মটি ব্যাবহার করতে পারেন। তবে এটা বলার আর অপেক্ষা রাখে না যে ই-লার্নিং হলো শেখার জন্য সবচেয়ে সময়সাশ্রয়ী পন্থা।
পারফরম্যান্স ট্র্যাকিং
প্রশিক্ষণার্থীরা কেমন শিখছে বা কতটা উন্নতি করতে পেরেছে ইত্যাদি পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে ই-লার্নিং বেশ সহায়ক। একটি LMS প্রত্যেকের পারফরম্যান্স বিষয়ক তথ্যাদি দিতে পারে। এমনকি কতটুকু আগ্রহী, কাজ করার প্রবৃত্তি, সম্পন্ন করে ফেলা কাজগুলো ইত্যাদি তথ্যগুলো ও পেয়ে যাবেন যদি পরবর্তীতে অনলাইন লার্নিং প্ল্যান করে থাকেন।
কর্মপরিধি
নতুন কোন সুচনা,পলিসি ও ট্রেনিং পরিচালনার ক্ষেত্রে ই-লার্নিং হলো সেরা সমাধান। নিয়মনিষ্ঠ শিক্ষাদান বা চিত্তবিনোদন যে কোন উদ্দেশ্যে আপনি এই প্লাটফর্মটি ব্যাবহার করতে পারেন। তবে এটা বলার আর অপেক্ষা রাখে না যে ই-লার্নিং হলো শেখার জন্য সবচেয়ে সময়সাশ্রয়ী পন্থা।
ধারণক্ষমতা
ই-লার্নিং চিত্রসহ, সংক্ষিপ্ত তবু অর্থবহ এবং প্রাসঙ্গিক উপস্থাপন করে থাকে। ঠিক এই কারনে আমাদের ব্রেইন অধিক সময় ধরে স্মৃতিতে ধারণ করে রাখতে পারে। নিজ সুযোগ সুবিধা বা প্রয়োজন মতো শিখতে পারা, অথবা যে কোন মুহূর্তে পনরায় শিখতে পারার মতো বিষয়গুলো ও মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এভাবে অনলাইন লার্নিং বেশি সময় ধরে কোন কিছু মনে রাখার বিষয়টিকে সহজ করে তোলে।
পরিশেষ
যদি ঠিকঠাকভাবে বাস্তবায়ন করা যায় তবে ই-লার্নিং হতে পারে আপনার ব্যাবসায়িক যে কোন প্রয়োজনের সঠিক ও পূর্নাঙ্গ সমাধান। কোভিড-১৯ এর কারনে বিশ্বব্যাপী যে পরিবর্তন দেখা দিয়েছে, তাতে মনে হয় না পুরনো শিক্ষাব্যবস্থায় পুরোপুরি ফিরে যাওয়া হবে। যে কোন ট্রেনিং এর জন্য ই অনলাইন লার্নিং এখন সময়োচিত ও কার্যকর ফর্ম। গত কয়েক মাস ধরে আমরা যে বাধা বিপত্তি গুলোর সম্মুখীন হয়েছি তারপর ও, যে কোন প্রশিক্ষণার্থীর কাছে অনলাইন এখন অধিক গ্রহনযোগ্য যেহেতু স্থান ও সময় আর সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না।